Monday, 15 February 2016

মানব সভ্যতার শ্রেষ্ঠ অধ্যায়

বর্তমানে manufactuerd,engineered এর বিনোদনের এই দুঃসহ যান্ত্রিক সময়ের যুগের চেয়ে,৭ম শতাব্দীর নির্ভেজাল,প্রাকৃতিক ও অকৃত্রিম মানবিক অধ্যায় শ্রেষ্ঠ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।ভেবে দেখুন,আজ আমরা পরিপূর্ণ  মানুষ নই।আমরা হচ্ছি নানা ধরনের aid সম্বলিত aided মানুষ বা sub-human beings.নকল ভ্রু,নকল চুল,নকল বক্ষ স্ফীতি এখন আর কোন ব্যাপারই না।পা কেটে মাঝখানে হাড় জোড়া দিয়ে উচ্চতা বাড়ানো হচ্ছে।চীনের মেয়েদের বর্তমানে "Carrier aid" এর প্রকৃষ্ট উদাহরন।২ ইঞ্চি উচ্চতা বাড়াতে পারলেই কেরিয়ারের বহুবিধ দ্বারা তার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে। ক্যালকুলেটর aided মেধা,ভায়াগ্রা aided সক্ষমতা,চশমা aided দৃষ্টি,সার্জারি aided উচ্চতা,এভাবে ভাবতে শুরু করলে দেখা যাবে ৭ম শতাব্দির তুলনায় আসলেই আমরা Sub-human. তাছাড়া তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে web এর বদৌলতে আমরা আসলে মগজ ধোলাইয়ের Spider web জালে আটকে পড়ে ক্ষুদ্র পতঙ্গের মত বিলুপ্তির প্রহর গুনছি।সুতরাং আমাদের বিচার বিবেচনা কি করে পরিচ্ছন্ন হবে? আমরা কীভাবে neutral value হব?সৃষ্টির সেরা সৃষ্টি রসুলুল্লাহ (সাঃ) কে আল্লাহতালা কোন মুহূর্তে পাঠাবেন সেটা একটা চুলচেরা হিসেব।"আক্ষরিক অর্থেই চুলচেরা"।

মানব সভ্যতার ইতিহাসের ঐ মুহূর্তের জন্য মানুষকে creative evolution এর মাধ্যমে বিকশিত করা হয়েছে।একের পর এক অনুশাসন,কিতাবের মাধ্যমে ভৌগোলিক,সামাজিক ও নৃতাত্বিক পর্যায়ে প্রস্তুতি চলেছে- আরবি ভাষাকে একদিকে বিশুদ্ধ ও পরিচ্ছন্ন রাখা হয়েছে,অপরদিকে বেদুইনদের মুখে তার বাকচাতুর্যতাকে বিস্ময়কর পর্যায়ে পরিচর্যা করা হয়েছে কারন আল্লাহর তার divine wisdom বলে জানতেন যে,ঐ সময়টাই পৃথিবীর ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সময়।পৃথিবীর নিকৃষ্টতম জাতির মাঝে সৃষ্টির সেরা মানুষকে প্রেরন করে সে জাতিকে পৃথিবীর উৎকৃষ্টতম জাতিতে পরিনত করার যে unique ধারা পরিলক্ষিত হয় তার নিরিখেই,মানবতার চূড়ান্ত বিকাশ তথা মানবিকতার চূড়ান্ত বিকাশ,রসুলুল্লাহ (সাঃ) কে ঘিরে গড়ে উঠা সাহাবাদের মদীনা সম্প্রদায়ের ঐ সময়ে ঘটেছে।আমাকে জিজ্ঞেস করলে,আমি বলব,Humanity passed it's peak in the 7th century-"৭ম শতাব্দিতে মানব সভ্যতা তার উচ্চতম শিখরে পৌঁছেছিল"।মাউন্ট এভারেস্ট হিমালয়ের একমাত্র চূড়া নয়,আরো আছে কিন্তু হিমালয়ের চেয়ে তারা ছোট।তেমনি রসুলুল্লাহ (সাঃ) ও প্রথম দুই খলিফার আমলে মানবিকতার যে বিকাশ ঘটেছিল তা আর কখনও হবার নয়।হ্যাঁ,মানুষ সেটার revival বা renewal এর চেষ্টা করে চলেছে,চলবে এবং এর চূড়ায় উঠবে কিন্তু সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠার সম্ভাবনা নেই।

মুসলিম হিসেবে আমি,আপনে বিশ্বাস করি,দ্বীনের দৃষ্টিকোণ থেকে,মনুষত্ব্যের দৃষ্টিকোন থেকে,সামাজিক মুল্যবোধের দৃষ্টিকোন থেকে,নৈতিকতার বিচারে ঐ সময়টি ছাড়া অন্যটি সর্বোৎকৃষ্ট ও আদর্শ সময় হতে পারে না।আমার,আপনার জন্য যেন মদীনার সেই তিন প্রজন্মের (সাহাবী,তাবেঈ,তাবেঈন) চিন্তা-চেতনা,আচার-আচরন,জীবনধারন সবকিছুই শ্রেষ্ঠ আদর্শ বা paradigm বলে বিবেচিত হয়।হ্যাঁ,রাসুল (সাঃ) বা ওমর (রাঃ) কখনও প্লেনে চড়েননি,আর আপনি প্লেনে চড়েছেন।এটাকে আমি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মনে করি।কিন্তু আপনি যদি বলেন,সাহাবীদের চেয়ে আপনি বেশি রাসুল (সাঃ) কে ভালবাসেন বলেই সাহাবীরা মিলাদ না পড়লেও আপনি নিয়মিত পড়েন, তাহলে আমি বলব আপনি মিথ্যাচার করছেন, আপনি বিদাতে নিমজ্জিত আছেন (Fundamentals of Tawheed,Dr.Billal philips).যখনই আমরা দ্বীন,ধর্ম নিয়ে কথা বলব,তখন সর্বপ্রথম আমাদের মডেল হবে রসুলুল্লাহ (সাঃ),তারপর নব্য মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত মুসলিমরা।

এখানে আরেকটা কথা পরিষ্কার হওয়া দরকার যে,অনেকেই বলে থাকেন সেই ৭ম শতাব্দিতে মানুষের ধ্যান ধারনা কত উন্নত ছিল।আবার অনেকে বলে থাকেন,সেই ১৪০০ বছর আগে কুরআনে অমুক বৈজ্ঞানিক কথা উল্লেখ আছে।এসব কথা আসলে অর্বাচীন ও মুর্খের মত,যা আংশিক বিশ্বাসসৃষ্ট হীনমন্যতা থেকে উদ্ভুত।মহাবিশ্ব বা পৃথিবীর উৎপত্তি সম্পর্কে আমরা এখন পর্যন্ত যে সবকথা,ধ্যান-ধারনা বা জল্পনা-কল্পনা জানি তার মধ্যে Big bang এর মাধ্যমে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে,এ মতবাদটাই সবার কাছে বেশি গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে।এ তত্ত্ব মতে,আগে পৃথিবী একটি বিন্দু ছিল,এবং এর ভেতরে পদার্থগুলো অসীম ঘনত্বে অবস্থিত ছিল।একটা বিশাল বিস্ফারণের মাধ্যমে বিন্দুটি ফেটে চৌচির হয়ে এর ভেতরের পদার্থগুলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল এবং সেই থেকে এই মহাবিশ্বের প্রসারন বেড়েই চলছে এবং বিবর্তনতো বটেই।একটা ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে,আমাদের অতি পরিচিত এই space time ঐ big bang এর মূহুর্তের অস্তিত্বহীনতা থেকে অস্তিত্ব লাভ করেছে আল্লাহর ইচ্ছায়।সুতরাং একদম সাদামাটা যুক্তিতেই বোঝা যায়,আল্লাহ  Space time নির্ভর কোন সত্ত্বা নন।তিনি হলেন,Independent of space time,তিনি এসব দ্বারা সীমিত নন।

ব্যাপারটা আমাদের মানবিক মগজে অনুধাবন করতে না পারলেও,তাঁর কাছে past,present,future একই সঙ্গে exist করে।আমরা যদি বিশ্বাস করি,আল্লাহ আছেন। তাহলে ১৪০০ বছর না ১৪ কোটি বছর আগে তিনি বলেছেন "সময় আপেক্ষিক"।তা নিয়ে বিস্মিত হওয়া যেমন হাস্যকর,তেমনি,এই post modern যুগে আল্লাহর নির্দেশিত জীবন ব্যবস্থা কাজ করবে কি না তা নিয়ে সংশয় করাও কুফুরির নামান্তর।আপনি কোরআন মনযোগ সহকারে পড়লে বুঝতে পারবেন যে,আল্লাহ কুরআনে কিয়ামতের বর্ননা দিতে গিয়ে past tense ব্যাবহার করেছেন।ব্যাপারটা puzzling মনে হলেও,এখন বুঝতে পারি আল্লাহর কাছে বা eternal time এ কিয়ামত সংঘটিত হয়ে গেছে বলেই,এমন বলতে পারেন।তাই যারা ভাবেন যে,DNA র রহস্য জেনে বুঝি স্বয়ং আল্লাহকে অবাক করে দিয়েছেন,তারা অবশ্যই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কথা ভাবেন না--তাদের ঐ 'সৃষ্টিকর্তা' আসলে তাদের মনগড়া সৃষ্টি।

আপনি আমি যদি মুসলিম হই,আল্লাহকে বিশ্বাস করি,কোরআনকে আল্লাহর বানী মনে করি তাহলে সকল দ্বিধা,সংশয়,সংকোচ ঝেরে ফেলে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হই,রসুল (সাঃ) এর দেখানো জীবনের মডেলই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ও কল্যানময় জীবন ব্যবস্থার মডেল---কোন সমাজ বিজ্ঞানী এর চেয়ে ভালকিছু উদ্ভাবন করতে পারবে না।

আমরা যেন আমাদের জীবন গঠিত হওয়ার পরে,দেয়াল ভেঙ্গে এর ভিত দেখা বা তা শক্ত কিনা পরীক্ষা করার মত বোকামি না করি।আমাদের যদি দেরি হয়েও গিয়ে থাকে,আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন তাদের structure খাড়া করার আগেই সে জীবনের ভিত্তির নির্ভরযোগ্যতা ও শ্রেষ্ঠত্ব জেনে নেয়।তাহলে জীবনের অপরাহ্ন বেলায়,আমাদের প্রজন্মের মত কুফুরির গাঁথন ভেঙ্গে,জোড়া-তালি মার্কা ঈমানের pillar গড়ার করুন চেষ্টা করতে হবে না,ইনশাআল্লাহ।

No comments:

Post a Comment