বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩৬৪ দিন মানুষকে ধোঁকায় ফেলে শয়তান যতটা না বিজয়ী হয়, তার চেয়ে শয়তান বেশি বিজয়ী হয় কালকের ১ টা দিনে। একদিনের জন্য ভালবাসা নামক জিনিসটাতে মাতার চেষ্টা করবে। যেহেতু ভালবাসা জিনিসটা কি তারা বুঝেনা, তাই আজকের দিনে নেচে-গেয়ে, বেহায়াপনা ছড়িয়ে ভালবাসা দেখানোর চেষ্টা করবে।
→সেই দিনটার কথা আপনাদের কারো অজানা নয়, 'বিশ্ব ভালোবাসা দিবস' নামে যে দিবস সারা পৃথিবীতে পরিচিত। এটা এমন একটা দিন, যে দিনে কিছু যুবক-যুবতী এমন সব অনাচার-অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়, যার কারণে পুরো ...পৃথিবীটাই একটি অসভ্য ভুমিতে পরিণত হয়।এই বেহায়াপনার পর থেকে ঈমানের ঘরে ভালবাসার পরিবর্তে ভুলের বাসা বেঁধে দেয়ার কাজটা যথারীতি চলছে।মুষ্ঠিমেয় কিছু মানব-মানবীরা এই দিবস উদযাপনে ব্যাপক নোংরামীর আয়োজন রেখেছে। আর এর ঠিক পিছনেই মানব জাতির আজন্ম শত্রু শয়তান এইডস নামক মরণ-পেয়ালা হাতে নিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। মানুষ যখন বিশ্ব ভালবাসা দিবস সম্পর্কে জানত না, তখন পৃথিবীতে ভালবাসার অভাব ছিলনা। আজ পৃথিবীতে ভালবাসার বড় অভাব। তাই দিবস পালন করে ভালবাসার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হয়! আর হবেই না কেন! অপবিত্রতা নোংরামি আর শঠতার মাঝে তো আর ভালবাসা নামক ভালো বস্তু থাকতে পারে না। তাই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হৃদয় থেকে ভালবাসা উঠিয়ে নিয়েছেন।
→ভালোবাসার জন্য কোনো বিশেষ দিবসের প্রয়োজন হয় না। বিশেষ পাত্র বা পাত্রিরও প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু বেলেল্লাপনা, বেহায়াপনা করার জন্য বিশষ সময়, দিবস লাগে, বিশেষ পাত্র বা পাত্রীর দরকার পড়ে। তাই ভালোবাসার কোনো দিবস পালন করা একটি ভাওতাবাজি ছাড়া কিছুই নয়। হ্যাঁ, বেহায়াপনার জন্য দিবস হতে পারে। কারণ অশ্লীলতা চর্চাকারীরা তাদের নির্লজ্জ আচরণ সবসময় করতে পারে না, সবার সাথে করতে পারে না। এর জন্য উপলক্ষ দরকার। যে দিবসের আড়ালে বেলেল্লাপনা চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালোবাসা দিবস পালনের ধরন ও প্রকৃতিই আমাদের বক্তব্যের বস্তুনিষ্ঠতা প্রমাণে যথেষ্ট বলে মনে করি।
বিশ্ব ভালবাসা দিবসকে চেনার জন্য আরও কিছু বাস্তব নমুনা পেশ করা দরকার। দিনটি যখন আসে তখন শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো একেবারে বেসামাল হয়ে উঠে। নিজেদের রূপ-সৌন্দর্য উজাড় করে প্রদর্শনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে।বিভিন্ন পার্ক, অন্ধকার রেস্টুরেন্টের ছোট্ট কেবিন গুলো একেকটা যেন 'আইয়্যামে জাহেলিয়াতের' পতিতাখানায় পরিণত হয়। বাবা-মায়ের আদরের ছেলেটি অন্য কোনো ভাইয়ের লক্ষী বোনকে নিয়ে এমন বেহেল্লাপনায় মেতে উঠে। যা একটি সভ্য দেশ কখনো মেনে নিতে পারে না, কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমরা নিজেদেরকে 'মুসলিম' বলে দাবী করি, কিন্তু ঐটা একটা নামকাওয়াস্তে লেবাস মাত্র।পৃথিবীর প্রায় সব মুসলিম নামধারী দেশগুলোতে 'ভালোবাসা দিবসের' নাম দিয়ে তরুন-তরুনীরা ব্যাভিচারে মেতে উঠে।
→এক সময় এই তরুনরাই ছিল উম্মাহর প্রহরী।আজ তারা উম্মাহর চিন্তা বাদ দিয়ে বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড খেলায় ব্যস্ত।বেছে নিয়েছে তাদের খায়েশ চরিতার্থ করার জন্য একটি স্বতন্ত্র দিনকে।এর চেয়ে মূর্খ কোনো সৎ ব্যাক্তিকেও আমি মেনে নিতে রাজী আছি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, এটি এমন একটি দিবস, যে দিনে কিছু মেয়ে পতিতা হবে, কিছু মেয়ে প্রতারিত হবে, কিছু ছেলে খারাপ কাজে জড়িত হবে।
আপনারা হয়তো জানেন, এই বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে সারা পৃথিবীতে প্রতিবছর প্রায় ৯০,২৪০ জন নারী তাদের গর্ভপাত করে।
→কি লির্লজ্জতা???
→এটা কি আইয়্যামে জাহেলিয়াত নয়???
তাই এই দিনটিকে কোনো মতেই বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বলা যাবে না, ১৪ ই ফেব্রুয়ারী দিবসের নাম হবে ''বিশ্ব বেহায়া দিবস''।এই দিবসের সঙ্গে কোনো মুসলিমের সম্পর্ক থাকতে পারে না। কারন মুসলিমদের প্রতিটি দিনই ভালোবাসার।
→''আদ্দিনু ওয়ান্ নাসিহা'' ''দ্বীন মানেই হলো কল্যাণ কামনা (ভালোবাসা, উপকার...)'', সুবহানাল্লাহ। ক্বুরআনের প্রত্যেকটি পাতায় পাতায় কেবল ভালোবাসার কথা।মা-বাবাকে কিভাবে ভালবাসতে হবে, আত্মীয়- স্বজনকে কিভাবে ভালোবাসতে হবে, স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে কিভাবে ভালোবাসতে হবে, প্রতিবেশী, মুসলিম-অমুসলিম বন্ধু-বান্ধব সহ এমনকি মাতা-পিতার বন্ধুদের সাথে কি আচরণ করতে হবে, সব খুলে খুলে আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা তার নিয়ম শুদ্ধ আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন।
সুতরাং ধিক্কার এই বিশ্ব বেহায়া দিবসকে। এটা মুসলমানের কোনো প্রয়োজন নাই, এটা প্রয়োজন ঐ দেশে, যে দেশের জীবনে, পরিবারে, সমাজে কোনো ভালোবাসা নাই।যে দেশের ছেলে- মেয়েরা ১৮ বছর পার হলেই মা- বাবাকে ছেড়ে গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে লিভ-টুগেদার করে, সেই দেশের জন্য ভালোবাসা দিবসের প্রয়োজন থাকতে পারে।
→আফসোস ঐ সকল তরুন-তরুনীদের যারা লাল গোলাপ নিয়ে প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে ১৪ ই ফেব্রুয়ারী যিনা-ব্যাভিচারে মত্ত হবে।ধিক্কার জানাই ঐ সব বুদ্ধিজীবি, লেখক, সাহিত্যিকদের, যারা ১৪ ই ফেব্রুয়ারী দিনকে পূঁজি করে তরুন-তরুনীদেরকে অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করে। এরকম হাজারো কুৎসিত কাজ করবে ভদ্রঘরের সন্তানেরা। যারা কিনা কথিত সভ্যতার আড়ালে নিকৃষ্ট ব্যাক্তি। যাদের ধর্ম দেহ বিলোনো। যাদের সংস্কৃতি কুমারিত্ব হারানো। যাদের মন-মানসিকতা পশুদের মত। যাদের চলাফেরা উলঙ্গপনাতে সয়লাব।এরা মূলত এক অধম শ্রেনীর ব্যাক্তি। যারা নিজের মান-ইজ্জত, সম্মান কিছুই বুঝেনা। দেহ বিলানোকেই জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ মনে করে। পাশ্চাত্য কালচারকে মনে করে নিজেদের ইজ্জত।
→আল্লাহ বলেন,
''সেই ব্যাক্তির চেয়ে আর কার কথা উত্তম হবে যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকলো, সৎ কাজ করলো, আর বললো আমি মুসলমান''।
অতএব মুসলমান হয়েও যারা ইসলামী সংস্কৃতিকে বাদ দিয়ে Western Culture গ্রহন করে নিয়েছে।
তোমরা প্রস্তুত থাকো কবর তোমাদেরকে হাতছানী দিয়ে ডাকছে।তুমি যদি তওবা ব্যতিত মৃত্যুবরন কর,হে যুবক তুমি আজ সাময়িক আনন্দের জন্য পাপের পথে বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছ।স্মরন কর সেই দিনের কথা যেদিন জিনার দায়ে তোমাকে নিক্ষেপ করা হবে গরম চুল্লিতে যার উত্তপ্ততা অনেক বেশি।যেদিন তোমার যৌনাঙ্গ লোহার হাঁতুড়ি দিয়ে পিটান হবে,সে শাস্তির ভয়াবহতা কিন্তু অনেক বেশি।যেদিন তোমাকে অবৈধ নারীকে চুমুর জন্য তোমার ঠোঁট দুটোকে জাহান্নামের কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলা হবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
“কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তিন ব্যক্তির সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে পবিত্রও করবেন না এবং তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক কঠোর শাস্তি নির্ধারিত থাকবে। তারা হচ্ছে বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক এবং অহংকারী গরীব”। [মুসলিম ও নাসায়ী]
কাজেই সিদ্ধান্ত তোমার হে যুবক!! ভাবো কি করবে সাময়িক আনন্দের জন্য বিরাট শাস্তি ভোগ করবে নাকি তা থেকে বিরত থাকবে।সরে এসো সে আগুন থেকে...বাঁচো নির্মল আর পবিত্র জীবন নিয়ে।ডানা মেলে দাও সেই মহান রবের দরবারে,প্রার্থনা কর এই ফিতনাহ থেকে হেফাজতের জন্য....
No comments:
Post a Comment