"আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে।" (সূরা লুকমানঃ ১৪)।
ওহে পুরুষগন,
আপনার স্ত্রীকে কখনও একথা বলবেন না যে "পৃথিবীর সকল নারীই প্রতিদিন এই কাজটি করছে। তুমি বিশেষ কিছু করছো না। আমার মা/বোন সবাই অন্তঃসত্ত্বার সময় সব টুকিটাক কাজ করত। তুমি শুধু একজন অলস।"
সে কোন অলস নয়, সে একজন গর্ভবতী। তাকে দেখতে সুন্দর হতে পারে। তার রিপোর্টও ভাল আসতে পারে। তার গর্ভাবস্থা জটিল নাও হতে পারে কিন্তু এটা তার জন্যও কঠিন। অবসাদ, ক্লান্তি, শারিরীক ব্যাথ্যা, অনিদ্রা ইত্যাদি গর্ভাবস্থায় একটি সাধারন বিষয়। যদিও তার গর্ভাবস্থা স্বাভাবিক ও সুন্দর হয়, তবুও তাকে যন্ত্রনা ও অস্বস্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
শুধু শারীরিক অস্বস্তি নয়, একজন মহিলাকে শারীরিক চাপের মধ্য দিয়েও যেতে হয়। অবসন্নতা, রাগ ও বিরক্তি এসময় একটি সাধারন প্রতিক্রিয়া। অতএব, তার প্রতি সহনশীল হোন। সে জীবনযুদ্ধে আপনার পাশেই থাকে, কিন্তু আপনি তাকে শুধু শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ভুলে সে আপনার সাথে খারাপ ও কঠোর আচরন করতে পারে। সবসময় সত্য কথা বলুন। তার সাথে ভাল ব্যবহার, ভালবাসাপূর্ন আচরন ও তার প্রতি যত্ন নিন। সত্যিই, তার (স্ত্রীর) এগুলো দরকার। আপনার সুন্দর কথা, যত্ন ও স্নেহ তার প্রয়োজন।
সে সবসময় ক্ষুধার্ত ও ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে। হ্যাঁ সবসময়, কিন্তু সে না পারে ভালভাবে খেতে আর না পারে ঘুমাতে। সুতরাং একটু ভাবুন, আপনি যদি ক্ষুধার্ত, অবসাদগ্রস্থ ও ক্রমাগত নয়টি মাস ব্যাথার মধ্যদিয়ে অতিক্রম করেন তাহলে আপনার কেমন লাগবে?
সঠিক সময়ে খাবার তৈরি হয়নি বলে তাকে গালমন্দ করবেন না। বরং প্রথমে তাকে জিজ্ঞাসা করুন, সে খাবার খেয়েছে কি না? কারন, আপনার স্ত্রী ও সন্তান উভয়ই ক্ষুধার্ত। বাড়ি নোংরা বলে তার কাছে অভিযোগ করবেন না বরং তাকে সাহায্য করুন। নিজের কাজ নিজে করুন।
প্রত্যেক গর্ভাবস্তাই আলাদা। এটি প্রথম অবস্থায় সহজ হতে পারে কিন্তু পরের বার এটি আরো কঠিন হতে পারে। সুতরাং বুঝতে চেষ্টা করুন।
আপনি কি দেখেন না, মানুষ তার প্রতি কত ভাল আচরন করে। তার জন্য নিজেদের আসন ছেড়ে দেয়। তাকে কেক ও চকলেট গিফট করে। যদি সমস্ত মানুষ তার সাথে ভাল আচরন করতে পারে, তবে আপনি কেন পারবেন না। আপনাকে এগুলো আরো বেশি করতে হবে কারন সে আপনার সন্তানকে ধারন করছে।
সে শরীরের সমস্ত শক্তি আর বল দিয়ে আপনার সন্তানকে বহন করছে। তাই আপনার উচিত, তাকে সবসময় সঙ্গ দেয়া, তার সাথে উত্তম আচরন করা। আর তখনই একটি সুন্দর সন্তান আশা করতে পারেন, যে আপনার জীবনকে সুন্দর ও পূর্নতায় ভরে তুলবে। আর হ্যাঁ, আপনার স্ত্রীও তখন তার সুন্দর জীবনে ফিরে আসতে পারবে। সুতরাং এখন থেকেই তার প্রতি যত্নশীল হোন।
No comments:
Post a Comment