বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড না থাকাটা যেন আজকাল ছেলে-মেয়েদের কাছে বেকডেটেড-এ পরিণত হয়েছে।
না,ব্যাপারটা কখনও এইরকম হতে পারেনা। ইসলাম একজন মুসলিমের জন্য জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আপডেটেড এবং কাল হাশরের ময়দান থেকে আপনার অবাধ মেলামেশায় তৈরি এই বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড আপনাকে জান্নাতে নিয়ে যাবেনা। জান্নাত পেতে হলে শয়তানি কর্ম ছেড়ে আল্লাহকে ভয় করতে হবে, নতুবা আমাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের ভয়াবহ ‘ শাস্তি ‘।
"হে যুবক! জীবনে উন্নতি করিতে চাইলে চলার পথে আল্লাহকে ভয় কর, কঠোর পরিশ্রম কর এবং বিয়ের আগে নারীকুল প্রাণী থেকে দূরে থাকো। কিন্তু বিয়ের পর তুমি তোমার বৌয়ের সাথে প্রেম কর, কেউ তোমাকে বাধা দিবেনা কারণ সে তোমার জন্য আল্লাহ কর্তৃক উত্তম দান এবং তোমাদের মধ্যে উত্তম ইসলামী জীবন ব্যবস্থার ফসল (জান্নাত) "
"হে নারী! তোমাকে আল্লাহ উত্তম মর্যাদা দিয়ে একজন পুরুষের জন্য ঈমানের অর্ধেক পূর্ণতা এবং উত্তম দান হিসাবে দুনিয়ায় আবির্ভাব করেছেন, সেই তুমি কিনা আল্লাহ'র নির্দেশ ভুলে নিজেকে লম্পটদের ভোগ পণ্যে পরিণত করছ, শালীনতা ভুলে কুচক্রের পাল্লায় ধাবিত হয়ে অশালীনতাকে জীবনের অংশ হিসাবে পছন্দ করে নিয়েছ। কিন্তু তুমি জাননা আল্লাহ কাকে তোমার জন্য নির্ধারণ করে রেখেছেন। সুতরাং তোমার জন্য আল্লাহ'র নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমার অপর সঙ্গীকে সতর্ক কর "
আল্লাহ আমাদের শইতানের কুমন্ত্রনাযুক্ত সুড়সুড়ি থেকে হেফাজত করুন এবং সুন্দর ইসলামী জীবন ব্যবস্থা গড়ে তোলার তওফিক দান করুন। আমীন।
হাদীসে এসেছে,
"যে পুরুষ এমন মহিলার দেহে কামনার সাথে হাত দেবে যে তার জন্য হালাল নয়,কিয়ামতের দিন তার হাত তার কাঁধের সাথে বাঁধা অবস্থায় হাশরের ময়দানে উপস্থিতিত হবে। যদি সে ঐ মহিলাকে চুমো খায় তবে জাহান্নামে তার ঠোঁট দুটি কাটা হবে। যদি সে তার সাথে ব্যাভিচার করে তবে তার উরু কেয়ামতের দিন তার বিরূদ্ধে সাক্ষ্য দিবে ।এবং বলবে...
"আমি হারাম কাজের জন্য তার উপর আরোহন করেছি।"
তখন আল্লাহ তা'আলা তার দিকে ক্রোধের দৃষ্টিতে তাকাবেন এবং তার চেহারার গোশত খসে পড়বে।আল্লাহ বলবেন তুমি কি করেছ?
তখন তার জিহ্বা বলবে, আমার জন্য যা হারাম ছিল তা বলেছি ; তার হাত বলবে আমি হারাম বস্তু গ্রহণ করেছি ;তার চোখ দুটো বলবে, আমি হারামের দিকে দৃষ্টিপাত করেছি।তার পা দুটো বলবে, আমি হারামের পথে অগ্রসর হয়েছি ;তার যৌনাঙ্গ বলবে, আমি ব্যভিচার করেছি ; রক্ষী ফেরেশতাদের একজন বলবে, আমি শুনেছি এবং অপরজন বলবে আমি তা লিখেছি।
আল্লাহ তা'আলা বলবেন আমি এ সম্বন্ধে অবগত ছিলাম কিন্তু তা গোপন রেখেছি। তারপর আল্লাহ তা'আলা বলবেন, "হে আমার ফেরেশতাগণ! তাকে পাকরাও কর এবং আমার শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাও। যার লজ্জা নেই তার প্রতি আমার ক্রোধের অন্ত নেই!"
(ইমাম হাফিজ শামসুদ্দীন আয যাহাবী (র) এর "কিতাবুল কাবায়ের" থেকে উদ্ধৃত)
২ .#স্বামী স্ত্রীদের জন্যঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,যখন স্বামী স্ত্রী একে অপরের প্রতি প্রেম এবং মহব্বতের সাথে দৃষ্টি বিনিময় করেন আল্লাহ সুবহানাল্লাহু তা'য়ালাও তাঁদের উভয়ের প্রতি রহমতের দৃষ্টি বর্ষণ করেন। (বুখারী ৬১৯, তিরমিজি ১৪৭৯)
#আর গার্লফ্রেন্ড ওয়ালাদের জন্যঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,“ব্যভিচারের একটি অংশ আদম সন্তানের জন্য নির্দিষ্ট করা আছে । নিঃসন্দেহে এটা সে পাবেই । দুই চোখের যিনা পরস্ত্রীর প্রতি দৃষ্টিপাত, দুই কানের যিনা হলো যৌন উত্তেজক কথাবার্তা শোনা, মুখের যিনা হলো আলোচনা করা, হাতের যিনা স্পর্শ করা, পায়ের যিনা ঐ উদ্দেশে চলাফেরা করা ।মন ঐ কাজের প্রতি কু-প্রবৃত্তিকে জাগ্রত করে এবং তার আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করে । আর যৌনাঙ্গ এই রকম অবস্থা সত্যায়িত বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে”(-বুখারীঃ ৬৩৪৩, মুসলিমঃ ২৬৫৭)
প্রেম উভমুখী......একই মঞ্চে জান্নাত ও জাহান্নাম! চাই শুধু একটু সংযমতা, একটু বশ্যতা, জাহান্নামটাকে পাশ কাটিয়ে জান্নাতটাকে খুজে নেওয়ার একটুখানি তীব্র ইচ্ছা!
৩.
যে সমাজে বিয়ে নামক হালাল সম্পর্ক কঠিন হয়ে যায়, সে সমাজে গালফ্রেন্ড আর বয়ফ্রেন্ড এর নামে হারাম সম্পর্কস্বরূপ জিনা-ব্যভিচার সস্তা হয়ে যায়।
উদাহরণস্বরূপ নগরীর বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, ভদ্রাপার্ক,গুলশান পার্ক, ধানমণ্ডি, লেকসহ বিনোদনের জায়গায়গুলোতে একটু উঁকি মারলেই বাস্তবতা টের পাওয়া যাবে।।।আল্লাহ আমাদেরকে হিদায়াত দিন।
৪.
বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড সম্পর্ককে থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। এটা হারাম, এটা পাপ, এটা আরো অনেক পাপের রাস্তা খুলে দেয়।
“কোন পাপ করার জন্য আপনার কামনা যত বড় হবে, সেই পাপকে এড়িয়ে গেলে আপনার ঈমান তত বড় হবে।”
– শাইখ মুহাম্মাদ বিন আল-উসাইমিন (রাহিমাহুল্লাহ)।[ফাতহ-উর-রব, পৃ ১০৫]
"এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎ কাজ করে, আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করাব যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য; এবং কে আল্লাহ অপেক্ষা বাক্যে অধিকতর সত্যপরায়ণ?"(সূরা আন-নিসাঃ ১২২)
" আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।"[ ১৭: ৩২] আল-ইসরা
৫.
প্রেম করে বিয়ে করা দম্পতির স্বামী বা স্ত্রীকে মাঝে প্রায়ই অভিযোগ করতে শোনা যায়, বিয়ের আগে অপরজনকে একরকম দেখেছে, এখন দেখছে আরেকরকম। বিয়ের আগে সে কত ভালো ছিল, অথচ বিয়ের পরই যেন তার আচরণ বদলে গেছে! আসলে কী হয়েছে জানেন? বিয়ের আগে যখন তারা হারাম সম্পর্কে লিপ্ত ছিল তখন শয়তান সুযোগটা নিয়েছে। সে তাদেরকে একে অপরের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এরপর যখন বিয়ে হল তখন শয়তান সরে গেল আর তারা দুজনের প্রকৃত রূপ উন্মোচিত হয়ে গেল। এবারে শয়তান আবার এল এবং এখন পরস্পরের মধ্যে বৈরীভাব সৃষ্টি করে তাদের বিচ্ছেদ ঘটানোর চেষ্টা করতে লাগল।
মানুষ হারাম সম্পর্কের মাধ্যমে সুখ খোঁজার চেষ্টা করে। এটা কত বড় নির্বুদ্ধিতা যে, সুখ দেওয়ার যিনি মালিক, তাঁকে অসন্তুষ্ট করে আমরা সুখী হবার চেষ্টা করি!!--- মুফতী ইসমাঈল ইবন মূসা মেঙ্ক
৬.
Love before wedding এটি ইসলামে হারাম, ইসলাম Love after wedding মানে। ইসলাম LAW মানে কিন্তু LBW মানে না।
LAW মানে আইন, শরীয়ত। মানলে ধরা খাওয়ার চান্স নাই। LBW হলে তো পুরাই ধরা।
মানুষের মধ্যে ইদানিং খুব সচেতনতা Grow করেছে কিছু শুনলে দলিল চায়।অত্যন্ত ভাল আলামত। তাই একজন আমার কাছে দলিলও চেয়ে বসল।
আমি বললাম আল্লাহ কি কুরআনে সুরা নূরে ৩০ নং আয়াতে পুরুষদেরকে এবং ৩১ নং আয়াতে নারীদেরকে দৃষ্টি সংযত রাখতে বলেন নি?
যেখানে চোখ পড়লেই ইসলামে দৃষ্টি সরানোর কথা বলেছেন সেখানে বিভিন্ন রাস্তার পাশে বসে পুতুপুতু কথা বলা ইসলাম জায়েজ করে এ চিন্তা আসল কোথায় থেকে?
মহানবী (সাঃ) বলেছেন কোন জায়গায় ছেলে ও মেয়ে একা একসাথে থাকলে তৃতীয়জন হচ্ছে শয়তান”।
সংকলনে - বিবাহ একটি উত্তম বন্ধুত্ব ডেস্ক।
No comments:
Post a Comment