জান্নাতী মানুষের বৈশিষ্ট্যাবলি

যেসকল মানুষ জান্নাতে যাবে বলে বিভিন্ন হাদীসে এসেছে, সেগুলোর একটি তালিকা নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

১) নরম অন্তরের অধিকারী। (মুসলিম, ২৮৪০)

২) গরীব, মিসকিন, দুর্বল, অসহায়। (মুসলিম, ২৮৫৩)

৩) নম্র-ভদ্র ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। (আহমাদ, ১/৪১৫, ৩৯৩৮)

৪) রাসূল (সাঃ) এর অনুসরণকারী ব্যক্তি। (বুখারী, ৭২৮০)

৫) দৈনিক ১২ রাকাত সলাত আদায়কারী; ফজরের পূর্বে ২ রাকাত, যোহরের পূর্বে ও পরে যথাক্রমে ৪ ও ২ রাকাত, মাগরিবের পরে ২ রাকাত, এশার পরে ২ রাকাত। (মুসলিম, ৭২৮)

৬) আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী ব্যক্তি। (মুসলিম, ১৩)

৭) তাহাজ্জুদ আদায়কারী, রোজা পালনকারী ও অন্যকে খাদ্যদানকারী। (তিরমিযি, ২/২০৫১, ১৯৮৪)

৮) ন্যায়পরায়ণ বাদশা। (মুসলিম, ২৮৬৫)

৯) আল্লাহ, আল্লাহর রসূল ও দ্বীনের প্রতি সন্তুষ্টি জ্ঞাপনকারী। (আবু দাউদ, ১/১৩৫৩, ১৫২৯)

১০) দুই বা দুইয়ের অধিক কন্যা সন্তান লালনপালনকারী। (মুসলিম, ২৬৩১)

১১) অযুর পর দুই রাকাত নফল সালাত। (তাহিয়্যাতুল অযু) রীতিমতো আদায়কারী জান্নাতি। (বুখারী ও মুসলিম)

১২) যে নারীর মধ্যে হাদীসে বর্ণিত চারটি গুণ (সময়মত সালাত আদায়কারী, স্বামীর বাধ্যানুগত, রমযানে সিয়াম পালনকারী, লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী) পাওয়া যায়। (ইবনে হিব্বান, সহীহ জামে আসসগীর, ১ম খণ্ড, ৬৭৩)

১৩) শহীদ, নবজাত শিশু ও জীবন্ত প্রোথিত সন্তান। (আবু দাউদ, ২/২২০০)

১৪) আল্লাহর পথের সৈনিক। (তিরমিযি, ২/১৩৫৩)

১৫) মুত্তাকী ও চরিত্রবান লোক। (তিরমিযি, কিতাবুল বির ওয়াসসীলা)

১৬) ইয়াতীমের লালনপালনকারী। (মুসলিম)

১৭) হজ্জে মাবরুরের বিনিময়ে জান্নাত। (বুখারী ও মুসলিম)

১৮) মসজিদ নির্মাণ করা। (মুসলিম)

১৯) লজ্জাস্থান ও জিহ্বার হেফাজত করা। (বুখারী, ৬৪৭৪)

২০) প্রতিবেশির সাথে ভালো ব্যবহার করা। (আহমদ, ১৩৬)

২১) আল্লাহর ৯৯টা নাম মুখস্থ ও হেফাজত করা। (বুখারি ও মুসলিম)

২২) কুরআনের হেফাজত ও হেফজ করা। (ইবনে মাযাহ, ২/৩০৪৭)

২৩) সালাম বিনিময় করা। (তিরমিযি, ১০/২০১৩৯)

২৪) কোন রোগীকে দেখতে যাওয়া। (মুসলিম)

২৫) দ্বীনি ইলম শিক্ষা লাভকারী। (মুসলিম)

২৬) অযুর পর কালিমা শাহাদাত পাঠকারী। (মুসলিম, কিতাবুত তাহারাহ)

২৭) সকাল-সন্ধ্যা সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পাঠকারী। (বুখারি)

২৮) অন্ধ ব্যক্তি, যে তার অন্ধত্বের উপর ধৈর্যধারণ করে। (বুখারি, কিতাবুল মারাদ্ব)

২৯) পিতামাতার হক্ব আদায় ও তাদের খেদমতকারী। (মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াসিলা)

৩০) কষ্টদায়ক জিনিস রাস্তা থেকে দূরকারী। (মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াসিলা)

৩১) রোগী ব্যক্তি স্বীয় রোগের উপর ধৈর্যধারণ করলে। (বুখারি, কিতাবুল মারদ্বা)

৩২) নবী, শহীদ, সিদ্দিক ও নবজাতক শিশু।

৩৩) স্বামীর ভক্ত, অধিক সন্তান জন্মদানে কষ্ট সহ্যকারী ও স্বামীর নির্যাতনে ধৈর্যধারণকারী। (তাবারাণী আল জামে, জামে আসসগীর ২৬০১)

৩৪) হারাম-হালালের উপর বিশ্বাস স্থাপনকারী। (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান)

৩৫) বাচ্চাদের মৃত্যুর উপর ধৈর্য ধারণকারীনি। (মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াসিলা)

৩৬) প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসী পাঠকারী। (নাসায়ী, ইবনে হিব্বান, তাবরাণী)

৩৭) ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওঁয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বেশি বেশি পাঠকারী। (ইবনে মাজাহ)

৩৮) যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহিল আযীম ওয়া বিহামদিহী’ বেশি বেশি পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতে খেজুর গাছ রোপন করা হবে। (সহীহ আল জামে আত-তিরমিযি)

৩৯) অন্যায়ভাবে নিহত ব্যক্তি। (নাসায়ী, ৩/৩৮০৮)

৪০) অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাত হওয়াতে ধৈর্য ধারণকারী নারী। (ইবনে মাজাহ, কিতাবুয জানায়েয)

৪১) ন্যায় বিচারকারী বিচারক। (সহীহ আল জামে আস-সগীর)

৪২) অপর ভাইয়ের ইজ্জত রক্ষাকারী। (সহীহ আল জামে আস-সগীর)

৪৩) ভিক্ষা না করা ও মানুষের কাছে হাত না পাতা। (আবু দাউদ)

৪৪) রাগকে নিয়ন্ত্রণকারী। (সহীহ আল জামে আস-সগীর)

৪৫) ঠান্ডার সময়ের দুই ওয়াক্ত সলাত (ফজর ও আসর) আদায়কারী। (মুসলিম)

৪৬) যোহরের সালাতের পূর্বে চার রাকাত সালাত আদায়কারী। (তিরমিযি)

৪৭) প্রথম তাকবীরে তাহরিমার সাথে একাধারে চল্লিশ দিন জামাতে সলাত আদায়কারী। (তিরমিযি)

৪৮) সাত শ্রেণির মানুষ যারা আরশের ছায়ায় স্থান পাবে তারা। (তিরমিযি)

৪৯) যারা নিজের ক্রোধকে হজম করে ক্ষমা করে দেয়। (সহীহ আল জামে আস-সগীর)

৫০) অহংকার, খিয়ানত ও ঋণ থেকে মুক্ত ব্যক্তি। (তিরমিযি)

৫১) আযানের উত্তর দেওয়া ও আযানের পরে দুআকারী। (নাসায়ী, মুসলিম)

৫২) আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী। (বুখারি)

৫৩) কবীরা গুনাহ বর্জনকারী। (মুসতাদরাকে হাকীম)

৫৪) যথাসময়ে সলাত আদায়কারী। (মুসলিম)

৫৫) অধিকহারে সিয়াম পালনকারী। (আল বুখারি)

৫৬) আপন লোকের কষ্টের উপর ধৈর্যধারণকারী। (বুখারি, মুসনাদে আহমাদ)

৫৭) বেশি বেশি সূরা ইখলাস তেলাওয়াতকারী। (সুনানে তিরমিযি)

৫৮) সেজদার আয়াত তিলাওয়াত করার সাথে সাথে সিজদাকারী। (মুসলিম)

৫৯) ঋণের ক্ষেত্রে অসচ্ছলতা ব্যক্তিকে অবকাশ ও অপারগকে ক্ষমা করে দেওয়া ব্যক্তি। (বুখারি)

৬০) পিতামাতার খেদমতকারী। (সুনানে তিরমিযি)

৬১) তিনবার করে জান্নাত চাওয়া ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি কামনাকারী। (সুনানে ইবনু মাজাহ)

৬২) স্ত্রীর জন্য নিজ স্বামীকে সন্তুষ্ট রাখা। (সুনানে তিরমিযি)

৬৩) ওযু করার পর দুআ পড়া। (মুসলিম)

৬৪) উত্তম চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া। (সুনানে তিরমিযি)

৬৫) সকাল-সন্ধ্যায় নিয়মিত মসজিদে গমনকারী। (বুখারি)

৬৬) সিয়াম পালন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা। (সহীহ আল জামে)

৬৭) মৃত্যুর সময় সর্বশেষ কথা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা। (সহীহ আবু দাউদ)